Saturday 2 March 2019

হাসপাতালে দেখা

ভেবেছিলাম পরেরবার যখন তার সাথে দেখা হবে, তাকে আমি "বেশ্যা" বলে গালি দিব। আজ দু'শ তেতাল্লিশ দিন পর তার সাথে দেখা হয়েছিলো, হাসপাতালে তার মায়ের অপারেশন ভাবলাম এমন অবস্থায় তাকে গালি দেওয়া ঠিক হবেনা। ঠিক কি বলে শুরু করবো তাও ভেবে পাচ্ছিলাম না, হাসপাতালে সিগারেট ধরানো নিষেদ আছে। তাকে ভাবলে কিংবা দেখলে আমার সিগারেট ধরাতে হয়, খুব বিরক্তিকর একটা অভ্যাস হয়ে গেছে। সিঁড়ি বেয়ে নেমে আসলাম, হাসপাতালের সিঁড়ি গুলা খুব নিষ্ঠুর কত শত মৃতপ্রাণের সাক্ষী হতে হয় এদের। রাস্তার পাশের টং দোকান থেকে একটা মধ্যবিত্ত সিগারেট আর এক কাপ কুকুর চা নিয়ে শেষ করে আবার ফিরে গেলাম। এখন আর তার সাথে কথা বলার বিশেষ কোনো ইচ্ছে নেই। দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম, মোবাইলে নতুন একটা গেমস ইনস্টল করতে হবে। হাসপাতালের ওয়াইফাই সার্ভিস টাও আমার মতো মন্দ প্রকৃতির অনেকক্ষণ সময় নষ্ট হলো। আমার কাছে সময়ের বিশেষ কোনো মূল্য নেই। শুরুটা সে ই করলো।
: মাহফুজ..
: হুম বলুন।
: খুব রাগ আমার উপর?
: তেমন না, ভাবছিলাম আপনাকে "বেশ্যা" বলে একটা গালি দিবো।
: তো দাওনা কেন?
: এখন ইচ্ছা নেই পরে দেখা হলে দিব, আপনার আম্মুর কি খবর??
: খুব ভালো নয়, হয়তো বাচঁবেনা। আব্বু রক্তের জন্য ছোটাছুটি করছে ম্যানেজ হচ্ছে না। রক্তের গ্রুপ ও পজেটিভ।
: আমার রক্তের গ্রূপ ও পজেটিভ, কিন্তু আমি দিবোনা।
কেনো আমি রক্ত দিবোনা সেটা জানতে চাইলো না, কিছুক্ষণ নিরব থেকে বললো, " আচ্ছা আসি, অনেক কাজ আছে"
আমি শুধু ওর চলে যাওয়ার সাথে চোখ মোছার দৃশ্যটা উপভোগ করলাম। হাসপাতালে সিগারেট ধরানো নিষেদ আছে, আবারো নীচে নামতে হলো।
Mahfooz

No comments:

Post a Comment

চারুর স্মৃতিপট এর কিছুকথা

- যেদিন আকাশে অনেক তারা ছিল সেদিন তুমি আমাকে ঘুম থেকে উঠিয়ে মধ্যরাতে ছাদে নিয়ে দাঁড় করিয়ে রেখেছিলে। তুমি গোধূলি ভালোবাসতে, কৃষি কলেজের ঘাঁষগ...